মিয়ানমারে বিদ্রোহী-অধিকৃত রুবি খনির কেন্দ্র মোগোক শহরে দেশটির জান্তা বাহিনীর বিমান হামলায় অন্তত ১৩ জন নিহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার এই বিমান হামলা চালায় সেনাবাহিনী।স্থানীয় একজন বাসিন্দা ও একটি সশস্ত্র বিরোধী দলের মুখপাত্রের বরাতে আজ রবিবার এ তথ্য জানায় ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
সংবাদমাধ্যমটি জানায়, হামলা সম্পর্কিত মন্তব্যের জন্য জান্তার মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থানীয় ব্যক্তি জানান, সকাল ৮টা ১৫ মিনিট নাগাদ জনবহুল এলাকায় চালানো এই হামলায় তাৎক্ষণিকভাবে সাতজন নিহত হয় ও পরে ঘটনায় আহত হওয়া আরও ছয়জন মারা যায়।
ওই ব্যক্তি বলেন, নিহতদের মধ্যে ভিক্ষারত একজন বৌদ্ধ ভিক্ষু এবং একই মোটরসাইকেলে থাকা বাবা-ছেলেও রয়েছেন। তিনি আরও বলেন, ‘এই এলাকার মধ্য দিয়ে একটি গাড়িতে করে যাওয়ার সময় হামলার মুখোমুখি হওয়ায় সাত ব্যক্তি আহত হয়েছেন।
গত গ্রীষ্ম থেকে মোগোক দখল করে রাখা তা’আং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মির একজন মুখপাত্রও একই নিহতের সংখ্যা জানান। তবে তিনি ১৪ জন আহত হওয়ার তথ্য জানিয়েছেন।
মুখপাত্র লওয়ে ইয়ে ও বলেন, ‘সকালের বিমান হামলাটি একটি জনবহুল এলাকায় আঘাত হানে। হামলার সময় রাস্তায় অনেক মানুষ চলাফেরা করছিল, তাই হতাহতের সংখ্যাও অনেক বেশি।’
২০২১ সালের অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকে দেশটিতে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। চলমান গৃহযুদ্ধে জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে জাতিগত গোষ্ঠী ও গণতন্ত্রপন্থী গেরিলারা প্রতিরোধ গড়ে তোলে। তাদের ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাহিনী প্রাথমিকভাবে অগ্রগতি অর্জনে ব্যর্থ হয়, তবে ২০২৩ সালের শেষের দিকে তারা হামলা শুরু করে রুবি ব্যবসার কেন্দ্র মোগোক শহরসহ বেশ কিছু এলাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়।
সম্প্রতি সেনাবাহিনী পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে সোনার খনির শহর থাবেইক্যিনসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল পুনর্দখল করেছে।
চার বছরেরও বেশি সময় আগে জান্তা সরকার অং সান সু চির সরকারকে উৎখাত করার পর বৃহস্পতিবার জরুরি অবস্থা শেষ করার ঘোষণা দিয়েছে এবং ডিসেম্বরে নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে, সু চি এখনও কারাগারে থাকায়, বহিষ্কৃত আইন পরণেতাসহ বিরোধী দলগুলো নির্বাচন বয়কট করছে।