যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তি করার ক্ষমতা বাতিল করেছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়টির সঙ্গে প্রশাসনের চলমান বিরোধের একটি নতুন মাত্রা। খবর আল জাজিরার
যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোম বৃহস্পতিবার এক্স (পূর্বে টুইটার) এ পোস্ট করে জানান, হার্ভার্ড ক্যাম্পাসে সহিংসতা, ইহুদি-বিরোধিতা এবং চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে সমন্বয়ের অভিযোগে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি করা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য একটি বিশেষাধিকার, অধিকার নয়।”
এই সিদ্ধান্তের ফলে হার্ভার্ডের স্টুডেন্ট এক্সচেঞ্জ ভিজিটর প্রোগ্রামের (SEVP) সার্টিফিকেশন বাতিল করা হয়েছে, যা হোমল্যান্ড সিকিউরিটির অধীনস্থ ইউনিট দ্বারা পরিচালিত। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়টি নতুন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারবে না এবং বর্তমানে ভর্তি থাকা শিক্ষার্থীদের তাদের অ-অভিবাসী স্ট্যাটাস বজায় রাখতে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানান্তর হতে হবে।
হার্ভার্ড এই পদক্ষেপকে “অবৈধ” এবং “প্রতিশোধমূলক” বলে অভিহিত করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়টি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা ১৪০টিরও বেশি দেশের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ও গবেষকদের স্বাগত জানাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এই পদক্ষেপটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈচিত্র্য কর্মসূচি এবং প্রো-প্যালেস্টাইন বিক্ষোভের প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প প্রশাসনের দাবির প্রতি হার্ভার্ডের অস্বীকৃতির প্রেক্ষিতে এসেছে। এর আগে প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে $২.৬ বিলিয়নেরও বেশি ফেডারেল তহবিল ও অনুদান কেটে দিয়েছে।
হার্ভার্ড প্রেসিডেন্ট অ্যালান গারবার সম্প্রতি প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে দাঁড়াতে এবং অনুদান দিতে আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি প্রেসিডেন্সিয়াল প্রাইওরিটিজ ফান্ড এবং প্রেসিডেন্সিয়াল ফান্ড ফর রিসার্চ চালু করেছেন, যা তহবিল কাটার ফলে সৃষ্ট ঘাটতি পূরণে সহায়তা করবে।
অভিবাসন আইনজীবী লিওন ফ্রেস্কো বলেছেন, এই সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আর্থিক ক্ষতি এবং শিক্ষার্থীদের জন্য বড় সমস্যা হতে পারে। তিনি বলেন, “যদি বিদেশি শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে অংশগ্রহণ করতে না পারে, তবে তারা ইতিমধ্যে পরিশোধিত টিউশন ফির অর্থ ফেরত পাবে, যা বিশ্ববিদ্যালয়টি আগামী বছরের জন্য নির্ভর করছিল।”
ফ্রেস্কো আরও বলেন, এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি প্রতিকার রয়েছে, কারণ SEVP সার্টিফিকেশন বাতিলের জন্য নির্দিষ্ট নোটিশ এবং অ-অনুবর্তিতার কারণ থাকতে হয়, যা রাজনৈতিক বা আদর্শগত ভিত্তিতে হতে পারে না।