১৪ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৩শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

ভারতে সবচেয়ে বড় পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে রাশিয়া

ভারতের সবচেয়ে বড় পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র পূর্ণ সক্ষমতায় নিতে দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তামিলনাড়ু রাজ্যের কুণ্ডনকুলমে নির্মাণাধীন এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ছয়টি রিঅ্যাক্টর নিয়ে গঠিত, যার মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা হবে ছয় হাজার মেগাওয়াট। 

নয়াদিল্লিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান পুতিন।

পুতিন বলেন, ‘আমরা ভারতের সবচেয়ে বড় পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র কুণ্ডনকুলম নির্মাণে একটি মাইলফলক প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি। ছয়টি রিঅ্যাক্টরের মধ্যে দুটি ইতোমধ্যে জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে এবং বাকি চারটির নির্মাণকাজ চলছে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্র পুরোপুরি চালু হলে ভারতের জ্বালানি চাহিদা পূরণে এটি বিশাল অবদান রাখবে।’

এর আগে বৃহস্পতিবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারেও একই তথ্য জানান পুতিন। এর আগে দুইদিনের সফরে ভারতে যান পুতিন। বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সফরকালে ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা ও জ্বালানি খাতে সহযোগিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। শুক্রবার রাতে ভারত ত্যাগ করেন তিনি।

পুতিন জানান, রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত পারমাণবিক শক্তি সংস্থা রোসাটম ইতোমধ্যে কুণ্ডনকুলম বিদ্যুৎকেন্দ্রের তৃতীয় রিঅ্যাক্টরের জন্য প্রথম চালানের পারমাণবিক জ্বালানি সরবরাহ করেছে। এই জ্বালানি রাশিয়ার নোভোসিবিরস্ক কেমিক্যাল কনসেনট্রেটস প্ল্যান্টে উৎপাদিত হয়েছে এবং কার্গো বিমানে পাঠানো হয়েছে।

২০২৪ সালে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী, তৃতীয় ও চতুর্থ রিঅ্যাক্টরের পুরো কার্যকালজুড়ে জ্বালানি সরবরাহ করবে রাশিয়া। এই চুক্তির আওতায় মোট সাতটি ফ্লাইটে জ্বালানি পরিবহন করা হবে।

পুতিন আরও বলেন, ভবিষ্যতে ভারত-রাশিয়া যৌথভাবে ছোট আকারের স্মল মডুলার রিঅ্যাক্টর, ভাসমান পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং চিকিৎসা ও কৃষিখাতে পারমাণবিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়েও সহযোগিতা বাড়াতে পারে।

তিনি দাবি করেন, রাশিয়া ভারতের জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে তেল, গ্যাস, কয়লা ও অন্যান্য জ্বালানি সরবরাহে নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে, যা দ্রুত বর্ধনশীল ভারতীয় অর্থনীতির জ্বালানি নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এর আগে চলতি বছরের শুরুতে ভারত ঘোষণা দেয়, তারা ২০৭০ সালের মধ্যে ১০০ গিগাওয়াট পারমাণবিক শক্তি উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে, যা বর্তমান সক্ষমতার তুলনায় প্রায় ১০ গুণ বেশি। এই উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বড় প্রকল্পের পাশাপাশি ছোট আকারের চুল্লিগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছে ভারত সরকার।ৎ

তথ্যসূত্র: এনডিটিভি

সর্বশেষ