চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে সরব হয়ে বিকেলে ফেসবুক লাইভে এসেছিলেন একজন সাংবাদিক। সেটিই যেন তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়াল। রাত নামতেই একদল দুর্বৃত্ত প্রকাশ্যে তাকে কুপিয়ে ও গলা কেটে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে।
নিহত সাংবাদিকের নাম আসাদুজ্জামান তুহিন (৩৮)। তিনি দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ–এর গাজীপুর প্রতিনিধি ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া থানার ভাটিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। পরিবার নিয়ে গাজীপুর মহানগরীর চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় বসবাস করতেন।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) রাত পৌনে ৮টার দিকে গাজীপুর মহানগরীর ব্যস্ততম এলাকা চান্দনা চৌরাস্তায় মসজিদ মার্কেটের সামনে একটি চায়ের দোকানে বসে চা পান করছিলেন তুহিন। ঠিক সে সময়ই কয়েকজন দুর্বৃত্ত হঠাৎ এসে তাকে ঘিরে ধরে। আত্মরক্ষার্থে তুহিন দৌড়ে পাশেই মসজিদ মার্কেটের দোতলায় তার অফিসের নিচে চায়ের দোকানে আশ্রয় নেয়। এ সময় দুর্বৃত্তরা তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে উপর্যুপরি কোপাতে থাকে। এক পর্যায়ে প্রকাশ্যে গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে তারা পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
জানা যায়, ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগে বিকেলে তুহিন চান্দনা চৌরাস্তার ফুটপাত ও দোকানপাট থেকে অব্যাহত চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে সরাসরি ফেসবুক লাইভে এসে কথা বলেন। এরপর সন্ধ্যার দিকে নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে একটি ভিডিও পোস্ট করে লিখেন— ‘যেমন খুশি তেমন রাস্তা পার হওয়ার দৃশ্য। গাজীপুর চৌরাস্তা।’
ঘটনার বিষয়ে বাসন থানার ওসি শাহীন খান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। কারা ও কী কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার রবিউল ইসলাম জানান, প্রকাশ্যে এই ধরনের হত্যাকাণ্ড বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে। হত্যাকারী যারাই হোন তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।
সাংবাদিক হত্যার ঘটনায় গাজীপুরের গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও শোকের ছায়া নেমে এসেছে। দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন সহকর্মীরা।