১১ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৬শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

ভারতে মুসলিম দুই ভাইকে ‘গো রক্ষা দলের’ সদস্যের গুলি, নিহত ১

ভারতের আগ্রায় উগ্র হিন্দু সংগঠন ‘গো রক্ষা দলে’র সদস্যদের গুলিতে এক জন নিহিত ও এক জন আহত হয়েছেন। হামলার শিকার দুই ব্যক্তি সম্পর্কে সহোদর। 

ভারতীয় গণমাধ্যমের বরাতে জানা যায়, বুধবার মধ্যরাতে নিজেদের পারিবারিক বিরায়ানির দোকান বন্ধের সময় তাদের ওপর এ হামলা হয়। 

জানা যায়, শহীদ আলি চিকেন বিরিয়ানি হাউজ নামের সেই দোকানে কাজ করতেন দুই ভাই গুলফাম আলি ও সাইফ আলি। রাতে বিক্রি শেষে গুলফাম দোকান বন্ধ করছিলেন এবং সাইফ আলি ঝাড়ু দিচ্ছিলেন।  এসময় হঠাৎতই দু’জন এসে গুলফামে ওপর গুলি চালায়। গুলি খেয়ে গুলফাম মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। সাইফ পেছন থেকে এগিয়ে এলে তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় সন্ত্রাসীরা।  এ ঘটনায় ঘটনাস্থালেই মারা যান গুলফাম। অল্পের জন্য বেঁচে যান সাইফ।

গুলফামের স্ত্রী ও তিনজন ছোট সন্তান রয়েছে। 

এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার একদিন পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও বার্তা দিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন দুই যুবক। নিজেদের তারা ‘গো রক্ষা দলে’র সদস্য বলে দাবি করেন।  ভিডিও বার্তায় তারা ঘোষণা করেন, পেহেলগামে ২৬ জনের বদলে ২৬০০ মুসলমান হত্যার করা হবে। 

ভিডিওতে এক যুবক বলেন, ‘আগ্রা শহরে আজ ২জন মুসলিমকে হত্যা করেছি- এর দায় আমি নিচ্ছি।  ২৬ জনের বদলে যদি ২৬০০জন মুসলিমকে হত্যা করতে না পারি তাহলে আমি ভারত মায়ের সন্তান নই।’

ভিডিওতে ওই যুবকের কোমড়ে একটি পিস্তলসহ আরও দুটি চাকু দেখা যায়। তার সাথে যে যুবক ছিল তার কোমড়েও অস্ত্র ছিল। 

অবাক করা বিষয় আগ্রা পুলিশ এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে ব্যক্তিগত শত্রুতা বলে আখ্যা দিয়েছে। পাশাপাশি পরিচিতি পাওয়ার জন্য তারা এই ভিডিও করেছে বলে পুলিশের দাবি। যদিও এই দুই যুবক হত্যাকাণ্ডটিকে পেহেলগামের হামলার বদলা হিসেবে ভিডিওতে উল্লেখ করেছে।  হয়েছে বলে জানিয়েছে। 

ভারতের উগ্র সংগঠন রাষ্ট্রীয় সয়ং সেবক সংঘ (আরএসএস) এবং সংঘ পরিবারের সঙ্গে এই গো রক্ষা দলের সংশিষ্টতা রয়েছে। ইতোমধ্যে এই গো রক্ষা দল দলিত হিন্দু ও মুসলমানদের ওপর বহু হামলা চালানোর অভিযোগ রয়েছে।  

এদিকে পেহেলগামের ঘটনা কেন্দ্র করে উত্তরপ্রদেশের বাড়িওয়ালারা কাশ্মীরি মুসলমানদের বাড়ি থেকে বের করে দিচ্ছেন। হিন্দু দোকানদাররা মুসলমানদের কাছে পণ্য বিক্রি করতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছেন। এছাড়াও দেশটির একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নোটিশ বোর্ডে লেখা হয়েছে, ‘মুসলিম অ্যান্ড ডগস আর নট অ্যালাউড’। 

এসব ঘটনায় ভারতের পুলিশ ও প্রসাশন একেবারে নীরব। এখন পর্যন্ত তাদের দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।

সর্বশেষ