২৫শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৩রা রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

‘অভিযানে না গিয়ে থানায়’, ৩ পুলিশ কর্মকর্তা প্রত্যাহার

ভাই, সারা দিন মাঠে ছিলাম। খালি দুপুরের খাবারটা খাইতে থানায় আসছি; ওই সময় স্যার ঢুকে পড়েছেন,” বলেন প্রত্যাহার হওয়া এক কর্মকর্তা।

পুলিশের বিশেষ অভিযানের সময় থানায় অবস্থান করার অভিযোগে মোহাম্মদপুরের এক সহকারী কমিশনারসহ তিন কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যেন ঝটিকা মিছিল করতে না পারেন, সেজন্য শুক্রবার এ বিশেষ অভিযান চালানো হয় বলে জানিয়েছেন পুলিশের কর্মকর্তারা।

যে এলাকায় মিছিল হবে ,সেই এলাকার কর্মকর্তাদের শাস্তি পেতে হবে—গেল সপ্তাহে ডিএমপি কমিশনারের কাছ থেকে এমন বার্তা আসার পর মাঠে তৎপরতা বাড়ে পুলিশের।

এর মধ্যে শুক্রবার দুপুরে তিন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করার খবর এল।

কর্মকর্তারা বলছেন, শুক্রবার বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ঢাকা মহানগর পুলিশের কর্মকর্তাদের মাঠে বিশেষ অভিযানে থাকতে বলা হয়েছিল, যেন কেউ ঝটিকা মিছিল করতে না পারে।

এমন নির্দেশনার মধ্যে বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ডিএমপির একজন অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদপুর থানায় গিয়ে দেখেন, মাঠে না গিয়ে কয়েক কর্মকর্তা থানায় অবস্থান করছেন। এরপরই তাদের ডিউটি থেকে প্রত্যাহার (ক্লোজ) করা হয়।

প্রত্যাহার হওয়া কর্মকর্তারা হলেন- মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) মেহেদি হাসান, মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (অপারেশন্স) আব্দুল আলিম ও ডিউটি অফিসার মাসুদুর রহমান।

এর মধ্যে মেহেদি হাসানকে ডিএমপি সদর দপ্তরে এবং বাকি দুজনকে কেন্দ্রীয় রিজার্ভ অফিসে সংযুক্ত করা হয়েছে।

তিন কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করার বিষয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন নজরুল ইসলাম বলেন, “অফিস আদেশে তো প্রশাসনিক স্বার্থে ক্লোজ করা হয়েছে দেখলাম।”

তিনি বলেন, “শুক্রবার বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত একটা স্পেশাল ড্রাইভ থাকার কথা ছিল মোহাম্মদপুর এলাকায়। বেলা সাড়ে ৩টার দিকে ডিএমপির একটি ঊর্ধ্বতন তদারকি টিম গিয়ে দেখে, মোহাম্মদপুর থানার সামনে পাঁচটা গাড়ি। এসি (সহকারী কমিশনার, মোহাম্মদপুর) ও পরিদর্শক (অপারেশন্স) অন্য কাজে ব্যস্ত। অথচ তাদের মাঠে থাকার কথা ছিল।

“ডিউটি অফিসারের কাজ ছিল স্পেশাল টিমগুলোর তদারকি করার। তিনি সেটা করেননি। এটা কাণ্ডজ্ঞানহীন। এ বিষয়টি কমিশনারকে জানানোর পর তাদেরকে ক্লোজ (প্রত্যাহার) করা হয়েছে। তাদের বিষয়ে তদন্তের পর বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এদিকে প্রত্যাহার হওয়া এক কর্মকর্তা বলছেন, “ভাই সারাদিন মাঠে ছিলাম। খালি দুপুরের খাবারটা খাইতে থানায় আসছি; ওই সময় স্যার ঢুকে পড়ছে।”

প্রত্যাহার হওয়া কর্মকর্তাদের এমন যুক্তির বিষয়ে নজরুল ইসলাম বলেন, “এখন তারা খাওয়া-দাওয়া করছিলেন বললে তো হবে না। সবাই মিলে থানায় এসে খাওয়া দাওয়া করবেন কেন, থানা কি পিকনিক করার জায়গা নাকি?”

সর্বশেষ