নতুন ধরনের চুম্বকের সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এই চুম্বক প্রচলিত চুম্বকের মতো আচরণ করে না এবং আলোকরশ্মিকে বাঁকিয়ে দিতে পারে। ‘অল্টারম্যাগনেট’ নামে পরিচিত বিশেষ ধরনের এই চুম্বকের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা আলোর নতুন রূপ নিয়ে গবেষণা শুরু করছেন। এই চুম্বক ভবিষ্যতে হালকা ও নমনীয় চুম্বকীয় যন্ত্র তৈরির নতুন সম্ভাবনা তৈরি করছে।
প্রচলিত চুম্বককে আমরা সাধারণত ফেরোম্যাগনেট ও অ্যান্টিফেরোম্যাগনেট হিসেবে দেখি। ফেরোম্যাগনেট লোহাকে আকর্ষণ করে। অ্যান্টিফেরোম্যাগনেটের কোনো চুম্বকত্ব নেই। আর তাই জাপানের তোহোকু ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা তৃতীয় শ্রেণির চুম্বকীয় বস্তু অল্টারম্যাগনেট নিয়ে গবেষণা করছেন। নতুন সন্ধান পাওয়া বিশেষ জৈব স্ফটিককে অল্টারম্যাগনেটের একটি সম্ভাব্য রূপ হিসেবে বিবেচনা করছেন বিজ্ঞানীরা। এই পদার্থের বিশেষত্ব হলো, এর কোনো চুম্বকত্ব নেই, কিন্তু প্রতিফলিত আলোর মেরুকরণকে প্রভাবিত করতে পারে। এ কারণে প্রচলিত অপটিক্যাল কৌশল ব্যবহার করে পদার্থটির বৈশিষ্ট্য বোঝা কঠিন বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
গবেষণা দলের প্রধান বিজ্ঞানী সাতোশি ইগুচি বলেন, সাধারণ চুম্বকের মতো অল্টারম্যাগনেটের কোনো আকর্ষণ নেই, কিন্তু এটি প্রতিফলিত আলোর মেরুকরণকে প্রভাবিত করতে পারে। প্রচলিত কৌশল দিয়ে এই চুম্বক নিয়ে গবেষণা করা কঠিন। এই গবেষণা জৈব যৌগসহ বিভিন্ন ধরনের পদার্থের চুম্বকত্ব অন্বেষণের নতুন দ্বার খুলে দিয়েছে। ফলে ভবিষ্যতে হালকা ও নমনীয় উপকরণ দিয়ে উচ্চ-কার্যক্ষমতাসম্পন্ন চুম্বকীয় যন্ত্র তৈরির ভিত্তি তৈরি হবে।
গবেষণার জন্য বিজ্ঞানীরা একটি নতুন গাণিতিক সূত্রও তৈরি করেছেন। নতুন সূত্র ব্যবহার করে তাঁরা জৈব স্ফটিকটির চুম্বকীয় বৈশিষ্ট্য ও এর মূল প্রক্রিয়া সফলভাবে ব্যাখ্যা করতে সক্ষম হয়েছেন। বিজ্ঞানীরা নতুন তাত্ত্বিক কাঠামো ব্যবহার করে একটি নির্ভুল অপটিক্যাল পরিমাপ পদ্ধতি তৈরি করেছেন। জৈব স্ফটিকের ওপর ম্যাগনেটো-অপটিক্যাল কের এফেক্ট পরিমাপ করে পদার্থের চুম্বকীয় ও ইলেকট্রনিক বৈশিষ্ট্য জানা যায়। নতুন চুম্বকীয় পদার্থে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য থাকার কথা এরই মধ্যে জানতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা।