গাজার পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। শনিবার সকাল থেকেই ইসরাইলি বাহিনীর চালানো অব্যাহত হামলায় কমপক্ষে ৫৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় হাসপাতালগুলো। নিহতদের মধ্যে রয়েছে ১৬ জন সহায়তা প্রত্যাশী, যারা খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা সংগ্রহের চেষ্টা করছিলেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ৩৭ জন নিহত হয়েছেন গাজা সিটি ও উত্তর গাজা এলাকায়। এছাড়া, উত্তর গাজার হামাদ হাসপাতাল জানায়, ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে ১০ জন নিহত ও ৭০ জন আহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই সহায়তা নিতে এসেছিলেন।
এর আগের দিন, শুক্রবারেও ইসরাইলি হামলায় অন্তত ৪১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হন। ধারাবাহিক এই হামলায় সহায়তা প্রত্যাশীদের ওপর আক্রমণ, যুদ্ধবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগের জন্ম দিয়েছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরাইল-হামাস যুদ্ধের ফলে এখন পর্যন্ত গাজা উপত্যকায় ৬৪,৩৬৮ জন নিহত এবং ১,৬২,৩৬৭ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। হাজার হাজার মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই ভয়াবহতা থামানোর কোনো ইঙ্গিত নেই ইসরাইলের পক্ষ থেকে। ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাৎজ শনিবার এক্স–এ একটি ভিডিও পোস্ট করেন, যেখানে গাজা সিটির একটি উঁচু ভবন ধসে পড়ার দৃশ্য দেখা যায়। ভিডিওর ক্যাপশনে তিনি লেখেন, ‘আমরা চালিয়ে যাচ্ছি।’
ইসরাইল দাবি করেছে, হামাস ওই ভবন নজরদারির কাজে ব্যবহার করছিল। তবে এ বিষয়ে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি এবং হামাস ওই দাবি অস্বীকার করেছে।
গাজার ওপর এ ধরনের তীব্র ও লাগাতার হামলা এবং সহায়তা প্রত্যাশীদের ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা পরিস্থিতিকে মানবিক বিপর্যয় হিসেবে আখ্যা দিয়ে তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি ও মানবিক করিডোর খোলার আহ্বান জানিয়েছে।
কিন্তু ইসরাইলের কণ্ঠে আপাতত কোনো নরম সুর নেই—তারা স্পষ্ট করে দিয়েছে, গাজা সিটিতে অভিযান চলবে, থামবে না।
সূত্র: আল জাজিরা