২৫শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৩রা রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

একদিন ‘থ্রি জিরো’ বিশ্ব গড়ে উঠবে, আশা ইউনূসের

আসুন আমরা এক নতুন তরঙ্গের স্থপতি হই—ন্যায়, টেকসই ও আশার ভিত্তিতে নির্মিত এক পৃথিবীর,” বলেন তিনি।

বিশ্বকে বদলে দিতে দারিদ্র্য, বেকারত্ব ও শূন্য কার্বন নিঃসরণ মুক্ত বা ‘থ্রি জিরো’ বিশ্ব গড়ে তুলতে তরুণদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি এও আশা প্রকাশ করেছেন যে, একদিন ‘থ্রি জিরো’ বিশ্ব গড়ে উঠবে।

তিনি বলেছেন, “আমি তিন শূন্যের এক পৃথিবীর কথা বলছি—শূন্য নিট কার্বন নিঃসরণ, শূন্য সম্পদ কেন্দ্রীকরণ (যাতে দারিদ্রের অবসান ঘটে) এবং শূন্য বেকারত্ব (যা সবার সৃজনশীলতা কাজে লাগিয়ে সম্ভব)।

“শূন্য বর্জ্য (জিরো ওয়েস্ট) ধারণাটিও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি জাতিসংঘ মহাসচিবের ‘জিরো ওয়েস্ট ইনিশিয়েটিভ’-এর অংশ। এটি কোনো কল্পনা নয়, ইতোমধ্যেই বাস্তবে রূপ নিচ্ছে।”

সোমবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ‘সোশ্যাল বিজনেস, ইয়ুথ অ্যান্ড টেকনোলজি’ শীর্ষক এক বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “এ কারণেই আমরা তরুণদের সর্বত্র ‘থ্রি-জিরো ক্লাব’ গড়ে তুলতে উৎসাহিত করছি—যেখানে প্রত্যেকে থ্রি-জিরো মানুষ হয়ে উঠতে পারে।”

এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, একজন থ্রি জিরো মানুষ প্রতিশ্রুতি দেয় টেকসইভাবে জীবনযাপন করার, বর্জ্য কমিয়ে আনার এবং সামাজিক উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার। একইসঙ্গে তারা বৈশ্বিক উষ্ণায়ন, সম্পদ বৈষম্য এবং বেকারত্বে কোনো অবদান না রাখার জন্য সচেষ্ট হয়।

“যত বেশি মানুষ এই আন্দোলনে যুক্ত হবে, এই ক্লাবগুলো রূপ নেবে থ্রি জিরো পরিবারে, থ্রি জিরো গ্রামে, থ্রি জিরো শহরে—এবং একদিন গড়ে উঠবে একটি থ্রি জিরো বিশ্ব।”

এটি একটি ছোট্ট পদক্ষেপ দিয়ে শুরু হয় মন্তব্য করে নোবেলজয়ী ইউনূস বলেন, “কিন্তু একসাথে সেই পদক্ষেপগুলোই বিশ্বকে পাল্টে দিতে পারে।”

তিনি বলেন, “এই অস্থির সময়ে প্রকৃত রূপান্তর নিহিত আছে আমাদের ঐক্যে। যদি আমরা একসঙ্গে হাত মিলাই—সামাজিক ব্যবসার শক্তি, তরুণদের উদ্যম এবং প্রযুক্তির সম্ভাবনাকে কাজে লাগাই—তবে জটিলতম বৈশ্বিক সংকটও আমরা সমাধান করতে পারব।

“আসুন আমরা এক নতুন তরঙ্গের স্থপতি হই—ন্যায়, টেকসই ও আশার ভিত্তিতে নির্মিত এক পৃথিবীর। এমন এক পৃথিবী, যেখানে আমাদের যৌথ স্বপ্ন মানবতার জন্য নতুন ভোরের সূচনা করবে।”

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে এদিন নিউ ইয়র্কে এসে পৌঁছান প্রধান উপদেষ্টা। আগামী ২ অক্টোবর তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।

সর্বশেষ